স্টক বাংলাদেশ -এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ইমলামিক বিভিন্ন চিন্তাবিদের দ্বারস্থ হয়েছেন। উত্তরের সন্ধানে খুঁজতে হয়েছে নানা পুঁথির মাসয়ালা।
শেয়ার লেনদেন করা কি জায়েজ?
এমন প্রশ্নের উত্তরে অনেকের মতামত হলো- অংশীদারী কারবারের শেয়ার লেনদেন জাহেলি যুগেও ছিল, এখনো রয়েছে। তাদের ভাষায় তারা ব্যাখ্যা করেন; কোন অংশীদার তার অংশ অন্য শরীকদের অনুমতি ছাড়া বিক্রি করতে পারবেন তবে অনুমতি সাপেক্ষে। তবে বাইরের লোককের কাছেও বিক্রি করতে পারবেন কিন্তু লেনদেন বৈধ হওয়ার জন্য ঐ সকল শর্ত ও আহকাম রয়েছে যা মুশারাকা ও মুদারাবা পূরণ করা হয়েছে।
‘ইসলামী জীবন-পদ্ধতির মুলনীতি’ অনুযায়ী একটি নিবন্ধ নীচে তুলে তুলে ধরা হলো। যা পাঠকদের প্রশ্নের উত্তর পেতে সহায়ক হবে।
- যে কারবারে পুঁজি হালাল বা অধিকাংশ হালাল সেখানে অংশীদার হওয়া বৈধ নতুবা বৈধ নয়।
- যে কারবার বৈধ পদ্ধতিতে করা হচ্ছে অবৈধ কোন দিক নেই, সেখানে অংশীদারী লেনদেন করা বৈধ। কেউ নিজের অংশ বিক্রি করতে চাইলে অন্য কেউ তা খরিদ করতে পারবেন। কিন্তু যে কারবার অবৈধ সে রকম কারবারের শেয়ার ক্রয় – বিক্রয় বৈধ নয় এবং তার মুনাফা হারাম।
- যে কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান সূদি বা জুয়ার কারবারি বা তার অধীকাংশ কারবার সূদি, জুয়া বা শরিয়তের বিরোধী হয় তখন তার শেয়ার লেনদেন অবৈধ ।
- শেয়ার পত্র কোন বাস্তব কোম্পানির রশিদ ও সার্টিফিকেট। উদাহরণ স্বরূপ- এক হাজার টাকার শেয়ার বিক্রির অর্থ কোম্পানির সেই সম্পদ থেকে সেই পরিমান অংশ বিক্রি করছে তাই যদি কোন বাস্তব কোম্পনি বিদ্যামান থাকে এবং সেখানে বিক্রির সকল মূলনীতি পাওয়া যায় তখন তার শেয়ার বিক্রয় বৈধ। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির কারবার ও ব্যবসায় উদ্দেশ্য শেয়ার জারি করা, যাতে নিদিষ্ট অংক অর্জন হওয়ার পর; কাজ করবে এখনও সে ব্যবসার কাজ শুরু করেনি তখন কোম্পানিতে শরিক হওয়ার জন্য এ রকম শেয়ার লেনদেন বৈধ; কিন্তু কাজ শুরু হওয়ার পূর্বে যে শেয়ার ক্রয় করা হয়েছে তা অতিরিক্ত বা কম মূল্যে বিক্রয় করা নিষিদ্ধ।
- বাংলাদেশ ব্যাংকিং ব্যবস্তা যেহেতু সুদী, তাই তার তত্ত্বাবধানে সকল ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন অবৈধ।
- সেখানে যদিও কিছু বৈধ পয়সা থাকে; কিন্তু অধিকাংশ অবৈধ ও সুদী, হালাল-হারামের অধিকাংশের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
- এ ছাড়া ওই সকল কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠান যাদের ওপর বাংলাদেশী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্তিত্ব রয়েছে তাদের কানুন ও পরামর্শ তারা কাজ করে তাই এদের শেয়ার ক্রয় করা নাযায়েজ। কেননা তার পুঁজি অবৈধ, দিতীয়ত তাদের ব্যবসা শরীয়তের মূল নীতি অনুসারে পরিচালিত নয়।
- যে সকল প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানি ধোঁকাবাজি, বেইমানী, সুদ, জুয়া ও অবৈধ পদ্ধতিতে করবার করে তাদের শেয়ার লেনদেন বৈধ নয়। তেমনি যে সকল কোম্পানির শেয়ারের পিছনে কোনো সম্পদ নেই বরং শুধুমাত্র পুঁজি রয়েছে। শেয়ার হোল্ডার এর কাছে শুধু মাত্র রশিদ আছে সেই রশিদকে ১১ বা ১২ টাকা দিয়ে বিক্রয় করা হয়- তা নিখুদ সুদ যা হারাম। সে জন্য বলেছি এ সকল কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নয়।
- তথ্য সূত্র : ইসলামী জীবন-পদ্ধতির মুলনীতি
- মূল লেখক : হযরত মওলানা মুফতি আব্দুচ্ছালাম চাটগামী, চট্টগ্রাম।অনুবাদক : মুফতি হুমায়ূন কবীর খালভী