ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৫ জুন ২০২৪

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিএসইসির তিন সিদ্ধান্ত


Reporter01
105

প্রকাশিত: ২২ এপ্রিল ২০২৪
পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বিএসইসির তিন সিদ্ধান্ত Collected from online



নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে চলমান দরপতন থেকে বেরিয়ে আসতে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকাল ৩টায় বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিএসইসির প্রধান কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ সময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্রোকারেজ হাউসগুলোর সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং প্রধান ১০টি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীগণ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণে প্রাথমিকভাবে তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ডিলার একাউন্ট থেকে বাজারে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান, ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের সাথে বৈঠক করে বিনিয়োগ সক্রিয় করা এবং মিউচুয়াল ফান্ডকে শক্তিশালী করা।

সভায় বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন , পুঁজিবাজারের অংশীজন এবং ব্রোকাররা বাজারের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়ে কাজ করছেন। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করে থাকে এবং পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত ও পরামর্শ এর মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করাই বিএসইসির লক্ষ্য।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিরি উত্তরণে আজকের সভায় বাজার সংশ্লিষ্টদের মতামত ও পরামর্শ আমলে নিয়ে কাজ করবে বিএসইসি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও আর্থিক অবস্থান যেমন উন্নতি হচ্ছে এবং দেশের পুঁজিবাজারও দ্রুতই প্রাণবন্ত ও বলিষ্ঠ রূপে ফিরবে বলে আশা করা যায়।

সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুতই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ও পুঁজির সুরক্ষা নিশ্চিত করে দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন তরান্বিত করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সভায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরে করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন। এছাড়া বিএসইসির নিবন্ধনপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের (স্টক ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংক, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ইত্যাদি) বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য আহ্বান জানান। তিনি ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে ব্যাংকসমূহের হেড অব ট্রেজারিদের সাথে একটি সভা অনুষ্ঠানের বিষয়ে মতামত প্রদান করেন।

বৈঠকে পুঁজিবাজারের সংকটসমূহ ও সংকট উত্তরনের উপায়সহ সকল সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বিএসইসি ও ব্রোকারেজ হাউজের প্রতিনিধিরা সমন্বিতভবে কাজ করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন। তারা জানান, পুঁজিবাজারকে আরো ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে তাদের সর্বাত্বক চেষ্টা ও সহযোগিতা থাকবে।

এদিকে পুঁজিবাজারের টানা দরপতন ঠেকাতে ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে মূলত এ বৈঠকের আয়োজন করেছে বিএসইসি। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে শেয়ারবাজারে দরপতন শুরু হয়। প্রায় দুই মাস ধরে দরপতনের ধারায় রয়েছে বাজার। ঈদের আগে শেষ ৪ কার্যদিবসে কিছুটা আশা দেখালেও ঈদের পরে আগের ধারায় ফিরেছে বাজারের লেনদেন। ফলে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ তুলে ধরতে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএসইসি।

এদিকে টানা পাঁচ কার্যদিবস পরে দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে সামান্য গতি ফিরেছে। আজ একচেঞ্জটিতে ৫৭৪ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। একইসাথে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে সূচক। সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ২১ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬৭৪ পয়েন্টে। এছাড়া, ডিএসইর অপর সূচক ‘ডিএসইএস’ ৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে ১২৪৩ পয়েন্ট এবং ‘ডিএস-৩০’ সূচক ১ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে ১৯৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ২১ পয়েন্ট বাড়লেও আগের পাঁচ কার্যদিবসে সূচকটি ২১০ পয়েন্ট বা প্রায় সাড়ে ৩ শতাংশ কমে গেছে। একইসাথে ডিএসইএক্সের অবস্থানগত গত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে। ফলে পুঁজিবাজারের অস্থিতিশীলতা, তারল্য সমস্যা, অর্থনৈতিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন সংকট থেকে উত্তরণে বৈঠক করেছে বিএসইসি।


আরও পড়ুন:

বিষয়: