লেনদেনে খরা, হতাশ বিনিয়োগকারীরা
নিউজ ডেস্ক
110
প্রকাশিত: ০৭ এপ্রিল ২০২২
শেয়ারবাজার নিয়ে আবারও হতাশা ভর করেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মনে। কয়েক দিনের টানা দরপতন ও লেনদেনের খরা এ হতাশা তৈরি করেছে। এ কারণে বাজারে এখন তীব্র ক্রেতাসংকট দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে দরপতন হয়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেন কমেছে আশঙ্কাজনকভাবে।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকালের লেনদেন ছিল গত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এদিন ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৯০ কোটি টাকা। এর আগে সর্বশেষ গত বছরের ১১ এপ্রিল সর্বনিম্ন ৪৫৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মধ্যে গতকালই প্রথম ঢাকার বাজারের লেনদেন ৫০০ কোটি টাকার নিচে নামল।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীরা এখন বাজারে নিষ্ক্রিয়। হাতে টাকা থাকলেও বাজারে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তাঁরা। এতে ধারাবাহিকভাবে লেনদেন কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। লেনদেন কমে যাওয়ায় আতঙ্কের পাশাপাশি হতাশা ভর করেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে, যার প্রভাব শেয়ারের দাম ও লেনদেনে পড়েছে। এতে কিছু কিছু কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতাসংকট দেখা দিয়েছে। দিনের সর্বনিম্ন দামেও কিছু কোম্পানির শেয়ারের ক্রেতা মিলছে না। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করতে চেয়েও বিক্রি করতে পারছেন না।
ঢাকার বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৩২ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে ৬ হাজার ৬৬২ পয়েন্টে। এ নিয়ে গত দুই দিনে ডিএসইএক্স সূচকটি ৭৮ পয়েন্ট কমেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি কমেছে ৭৯ পয়েন্ট। ঢাকার বাজারে এদিন ৩৭৫টি প্রতিষ্ঠানের লেনদেন হয়। তার মধ্যে ২৯৩টি বা ৭৮ শতাংশেরই দাম কমেছে। দাম বেড়েছে কেবল ৪৪টি বা ১২ শতাংশের আর অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টি বা ১০ শতাংশের দাম।
শেয়ারবাজারের লেনদেনকারী একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় অনেকের টাকা আটকে গেছে। ফলে তাঁরা বাজারের নিয়মিত লেনদেনে সক্রিয় হতে পারছেন না। এ কারণে বাজারে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। বাজারে হঠাৎ লেনদেন কমে যাওয়ায় চিন্তিত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি)। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের আবারও বাজারমুখী করতে নানা উপায় খুঁজছেন বিএসইসির কর্মকর্তারা।
এদিকে মন্দা বাজারে আজও মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং। এদিনও কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ তথা ১০ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। দিনের সর্বোচ্চ মূল্যবৃদ্ধি হলেও কোম্পানিটির মাত্র ১ হাজার ২২টি শেয়ারের হাতবদল হয়েছে ঢাকার বাজারে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে যাঁরাই কোম্পানিটির শেয়ার পেয়েছেন, তাঁদের বড় একটি অংশই শেয়ার বিক্রি না করে ধরে রেখেছেন। ফলে বাজারে এটির শেয়ারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ঢাকার বাজারে গত ৩১ মার্চ লেনদেন শুরু হয় জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিটের। আইপিওতে কোম্পানিটি প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করেছিল ২০ টাকায়। মাত্র চার কার্যদিবসের ব্যবধানে সেই শেয়ারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকায়।
আরও পড়ুন:
মার্কেট টাইমস সম্পর্কিত আরও
দিনভর উত্থান দেখিয়ে ঈদের ছুটিতে শেয়ারবাজার
১৩ জুন ২০২৪
সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে শেয়ারবাজারে
১২ জুন ২০২৪
তিন শতাধিক কোম্পানির দরপতনেও বেড়েছে লেনদেন
১১ জুন ২০২৪
দেড় ঘণ্টায় প্রধান সূচক কমলো ৭২ পয়েন্ট
১০ জুন ২০২৪
লোকসানে ১১ খাতের বিনিয়োগকারীরা
০৮ জুন ২০২৪
সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ৩৮১ কোটি টাকার লেনদেন
০৫ জুন ২০২৪