মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক বাড়লেও কমেছে লেনদেন
নিউজ ডেস্ক
91
প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারী ২০২১
করোনা ভাইরাসের কারণে বিকাশ, রকেটের মতো মোবাইল ব্যাংকিং সেবার উপর মানুষের নির্ভরশীলতা অনেক বেশি পরিমাণে বেড়েছে। ফলে এসময়ে সশরীরে গ্রাহকের উপস্থিতি কমেছে ব্যাংকগুলোতে। সক্রিয় হিসাব এবং গ্রাহক সংখ্যা দুটোই বেড়েছে। তবে জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। টাকার অঙ্কে যা চার হাজার কোটির বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এমএফএস-এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকরা ৬২ হাজার ২৩০ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার সাত কোটি টাকা। এর আগের মাস জুলাইয়ে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল দুই হাজার ১৪২ কোটি টাকা। ওই মাসে মোট লেনদেন হয় ৬৬ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা।
তবে ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন সেবা ‘নগদ’-এর তথ্য এখানে যোগ হয়নি। নগদের হিসাব যোগ হলে মোট লেনদেন ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা বেড়ে যেত। অর্থাৎ দৈনিক লেনদেনে নতুন করে যুক্ত হতো ৭৫০ কোটি টাকার মতো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার মধ্যে গ্রাহকদের কাছে মোবাইলের লেনদেন আরও জনপ্রিয় করতে বিশেষ ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। মানুষও মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ক্যাশলেস লেনদেনের ওপর আস্থা রাখে। পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন-বোনাস, সরকারের সামাজিক সুরক্ষার বিভিন্ন ভাতা ও অনুদান বাধ্যতামূলকভাবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়া হয়। ঈদুল-আজহার সময় এ সেবায় লেনদেনের পরিমাণ ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে জুলাই মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ধীরে ধীরে করোনার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। ঈদ-পরবর্তীতে অর্থাৎ আগস্ট মাসে মানুষের কেনাকাটাও কমতে থাকে। সরকারি বিভিন্ন অর্থবরাদ্দও লোপ পায়। সঙ্গে মোবাইলে রেমিট্যান্স প্রবাহও কমে যায়। সব মিলিয়ে জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বেশ কিছুটা কমে যায়।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে এমএফএস সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিকাশের হেড অব কর্পোরেট কমিউনিকেশন অ্যান্ড পিআর শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম অর্থসূচককে বলেন, সবসময় ঈদের মাসে (জুলাই) মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন বাড়ে। এছাড়া করোনার বিস্তার রোধে অনেকে গ্রামে না গিয়ে সহজে প্রিয়জনদের টাকা পাঠিয়েছেন এ মাধ্যমে। পাশাপাশি জুলাই মাসে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটাও বাড়ে। ঈদের পরের মাস আগস্টে স্বাভাবিকভাবে এসব কার্যক্রম কমে যায়। ফলে লেনদেনও কম হয়।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে বর্তমানে ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে। গত আগস্ট মাসে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার টাকা জমা পড়ে (ক্যাশ ইন) ১৮ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। তোলা হয় (ক্যাশ আউট) ১৪ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। এ সময় ব্যক্তিহিসাব থেকে ব্যক্তিহিসাবে পাঠানো হয় ১৯ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। একই সময়ে কেনাকাটায় তিন হাজার ৪৬৫ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এ মাধ্যমে। সামাজিক নিরাপত্তার ভাতা কমে ১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। কর্মীদের এক হাজার ৯০৩ কোটি টাকার বেতন-ভাতা প্রদান, মোবাইল ফোনের ৬৮৮ কোটি টাকার ব্যালান্স রিচার্জ এবং গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ বাবদ এক হাজার ৩২৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট শেষে এমএফএস সেবায় যুক্ত আছেন ১১ লাখ ৬২ হাজার এজেন্ট। নিবন্ধিত গ্রাহক ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৬৪ হাজারের বেশি। এর মধ্যে তিন থেকে চার কোটি হিসাবে নিয়মিত লেনদেন হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের মার্চে বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শুরু হয়। প্রথমে বেসরকারি খাতের ডাচ-বাংলা ব্যাংক এ সেবা চালু করে। পরে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘রকেট’। এরপর বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু হয় ‘বিকাশ’। আর ডাক বিভাগের ব্র্যান্ড ব্যবহার করে ‘নগদ’ বাজারে লেনদেন শুরু করে ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। বর্তমানে বিকাশ, নগদ, রকেটের পাশাপাশি এম ক্যাশ, উপায়, মাই ক্যাশ, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠান মোবাইলে আর্থিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মুঠোফোনে মোট অর্থ লেনদেনের ৭০ ভাগই এখন বিকাশের দখলে। এরপরে রকেটের অবস্থান।
আরও পড়ুন:
মার্কেট টাইমস সম্পর্কিত আরও
দিনভর উত্থান দেখিয়ে ঈদের ছুটিতে শেয়ারবাজার
১৩ জুন ২০২৪
সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে শেয়ারবাজারে
১২ জুন ২০২৪
তিন শতাধিক কোম্পানির দরপতনেও বেড়েছে লেনদেন
১১ জুন ২০২৪
দেড় ঘণ্টায় প্রধান সূচক কমলো ৭২ পয়েন্ট
১০ জুন ২০২৪
লোকসানে ১১ খাতের বিনিয়োগকারীরা
০৮ জুন ২০২৪
সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ৩৮১ কোটি টাকার লেনদেন
০৫ জুন ২০২৪