ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৫ জুন ২০২৪

এলজে ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা সুহৃদের


নিউজ ডেস্ক
94

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
এলজে ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা সুহৃদের



মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান : লোন রিকভারির জন্য এনআরবি ব্যাংক কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত এলজে ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজি লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ ৬০ থেকে ৭০ জনের বিরুদ্ধে ফ্যাক্টরি ভাংচুর ও মালামাল চুরির অভিযোগে ক্ষতিপূরণের মামলা করেছেন পুঁজিবাজারের তালিকাভূক্ত কোম্পানি সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। গত বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের কোনাবাড়ি থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলা নং-১৮, ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩৭৯/৩৮০/৪২৭। মামলার অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এনআরবি ব্যাংকের একজন গ্রাহক। ব্যাংকটি থেকে ২০১৬ সালে কোম্পানিটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ প্রায় নয় কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে।  মূলত ওষুধ শিল্পের প্যাকেজিং-এ ব্যবহৃত অন্যতম উপাদান পিভিসি ফিল্ম উৎপাদন, কাঁচামাল আমদানী এবং বিক্রয় করে আসছে সৃহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। ইজিএমের মাধ্যমে কোম্পানির দায়িত্ব পাওয়ার পর নতুন পরিচালনা পর্ষদ ২০১৯ সালের ২০ নভেম্বর চুক্তি মোতাবেক ব্যাংকের সাত কোটি পঞ্চান্ন লাখ বায়ান্ন হাজার পাঁচশত আটানব্বই টাকা ঋণ পরিশোধ করে। উক্ত চুক্তি পত্রের ২.২ (ডি) অনুচ্ছেদ-এ ব্যাংক কর্তৃক সুদ মওকুফ বিবেচনা করা হবে মর্মে উল্লেখিত আছে। [caption id="attachment_20716" align="alignnone" width="791"] সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা ভাংচুরের চিত্র[/caption] কোভিড-১৯ করোনা বিশ্বব্যাপী মহামারির কারনে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আর ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকার কারণে আয়ের সোর্স বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় সহযোগিতার হাত না বাড়িয়ে দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রণোদনা না দিয়ে পুনঃতফসিল কিংবা ব্যাংকের সাথে চুক্তি পত্রের ২.২ (ডি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুদ মওকুফ করে এককালিন এক্সিট সুবিধা না দিয়ে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর সম্পদ ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে এবং কোম্পানির ৭০ কোটি টাকার সম্পদ ৫ কোটি টাকায় পেছনের দরজা দিয়ে বিক্রির পায়তারা করছে এনআরবি ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়। সাবেক পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানির সকল সম্পদ ২০১৬ সালে ব্যাংকের নিকট বন্দকী রাখলেও উক্ত বন্দকী বৈধ নয়, কেননা ২০১৪ সালে কোম্পানিটি পাবলিক লিমিটেড হিসেবে শেয়ার মার্কেটে তালিকাভূক্ত হয়েছে। সাবেক পরিচালনা পর্ষদের শেয়ার ছিল ১০ শতাংশ, তারা কোন ইজিএম না করে এবং ৯০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডারদের মতামত না নিয়ে পাবলিক কোম্পানির সম্পদ প্রাইভেট লিমিটেড হিসেবে জালজালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ২০১৬ সালে এনআরবি ব্যাংকের নিকট বন্দকী দিয়েছে। যেহেতু উক্ত বন্দকী বৈধ নয়, তাই এনআরবি ব্যাংক সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে অর্থ ঋণ আদালতে কোন মামলা করতে পারছে না। [caption id="attachment_20717" align="alignnone" width="771"] সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা ভাংচুরের চিত্র[/caption] মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কোন অবগতি, অবহিত, চিঠিপত্র, ই-মেইল, মাইকিংসহ কোন বার্তা না দিয়ে হঠাৎ গত ১৭ সেপ্টেম্বর এনআরবি ব্যাংকের নিয়োগপ্রাপ্ত কোম্পানি এলজে ম্যানেজমেন্ট এন্ড টেকনোলজি লিমিটেড গাজীপুরের কোনাবাড়িতে অবস্থিত সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কোনাবাড়ি, গাজীপুর ফ্যাক্টরির প্রধান গেইট, বিল্ডিং এর ওয়াল, কেঁচি গেইটের তালা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। আর এ কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এনআরবি ব্যাংক, প্রধান কার্যালয়ের অথোরাইজড পারসন মোঃ জাবেদ রহিম মন্ডল। প্রথমে তারা ৬০ থেকে ৭০ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক নিয়ে এনআরবি ব্যাংকের নিয়োগপ্রাপ্ত লোন রিকভারি কর্মকর্তা পরিচয়ে ফ্যাক্টরিতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে এবং ফ্যাক্টরীর বিভিন্ন ফ্লোরে অবস্থান নেয়। ফ্যাক্টরীর সম্মুখে ক্রেন বসায় এবং ফ্যাক্টরির গুরুত্বপূর্ণ মেশিনারিজসহ আনুসাঙ্গিক যন্ত্রপাতি, পাওয়ার ক্যাবল এবং পরিবহনে ব্যবহৃত ২টি কাভারভ্যানসহ ফ্যাক্টরীর মালামালের মূল্য নিরীক্ষিত প্রতিবেদন অনুযায়ী সর্বমোট পাঁচ কোটি সাতানব্বই লাখ আঠাশ হাজার সাতশত পঞ্চাশ টাকার যন্ত্রপাতি ও মালামাল চুরি করে ট্রাকে করে নিয়ে যায়। এবং ফ্যাক্টরির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। যার ক্ষতির পরিমান অনুমানিক ছয় কোটি টাকা প্রায়। স্থানীয় জনগনের সামনেই তারা এই ধরনের নৈরাজ্য করেছেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই রকম নিন্দনীয় ঘটনার সাক্ষী হয়ে আছেন সেখানকার প্রত্যক্ষদর্শীরা। [caption id="attachment_20718" align="alignnone" width="786"] সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা ভাংচুরের চিত্র[/caption] এদিকে কারখানার ক্ষতিসাধন ও মালামাল চুরির বিষয়টি জানার পর বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান ৯৯৯ এ ফোন করে সংশ্লিষ্ট থানায় অবগত করেন। কোম্পানীর সকল পরিচালকের সাথে কথা বলে এবং চুরি যাওয়া মালামালের রেজিস্টারের সাথে মিলাতে গিয়ে মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। তিনি অনতিবিলম্বে চুরি যাওয়া মালামাল উদ্ধারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। এদিকে রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) বরাবরা উল্লেখিত মামলার বিষয়টি অবহিত করেছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। পাশাপাশি ফ্যাক্টরির ক্ষয়ক্ষতি ও মেশিনারিজ চুরিসহ যাবতীয় বিষয় কমিশনকে অবহিত করেছে কোম্পানিটি।

আরও পড়ুন:

বিষয়: