ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৬ জুন ২০২৪

ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করবে যমুনা গ্রুপ


নিউজ ডেস্ক
369

প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২১
ইভ্যালিতে বিনিয়োগ করবে যমুনা গ্রুপ



বহুল আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালিতে এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ যমুনা গ্রুপ। প্রাথমিকভাবে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে গ্রুপটি। ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে মোট এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয় ইভ্যালির পক্ষ থেকে। তবে ইকমার্স প্রতিষ্ঠানটির মূল বাজার দর (ভ্যালুয়শন) প্রকাশ করেনি কোনো পক্ষ। এই অংশীদারিত্ব কার্যকর হলে খাদের কিনার থেকে উঠে দাঁড়াতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় এই ই-কমার্স প্ল্যাটফরমটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদন প্রকাশের পর কোম্পানিটি অনেকটা অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের করা ওই প্রতিবেদন অনুসারে, ইভ্যালির দায়ের পরিমাণ পাহাড়সম। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে অন্তত ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৩৩৯ কোটি টাকার ঘাটতি। ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ইভ্যালির উপর নানামুখী চাপ বাড়তে থাকে। একদিকে বাণিজ্যমন্ত্রণালয় একটি নীতিমালা করে আগাম মূল্য গ্রহণের পর পণ্য সরবরাহের সময় বেঁধে দেয়। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি ব্যাংক তাদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ইভ্যালিসহ কয়েকটি ই-কমার্স প্ল্যাটফরম থেকে পণ্য কেনার সুবিধা স্থগিত করে। একদিকে আগাম মূল্য পরিশোধকারী ক্রেতাদের কাছ থেকে পণ্য সরবরাহের চাপ বাড়তে থাকে। অন্যদিকে বকেয়া বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইভ্যালিকে নতুন পণ্য সরবরাহ অনেকটাই বন্ধ করে দেয়। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি প্রতিষ্ঠানটির জন্য নাজুক হয়ে উঠতে থাকে। অনেকেই আশংকা করতে থাকেন, কোম্পানিটি হয়তো আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। আর পাওনাদারদের টাকাও মিলবে না। তবে কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল একাধিকবার ফেসবুক লাইভে এসে ক্রেতাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন পণ্য সরবরাহের বিষয়ে। তিনি সবার কাছে সময় চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রথম দিকে ইকমার্স বাজারে নিজের অবস্থান তৈরি করার জন্য বাড়তি মূল্য ছাড় দিতে হয়েছে বলে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে। কিন্তু ধীরে ধীরে ছাড় ছাড়াই পণ্য বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। তাই তাদেরকে সময় দিলে তারা এই সংকট সামলে নিতে পারবেন। যমুনা গ্রুপের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে হয়তো মোহাম্মদ রাসেলের কথাই ঠিক হবে, ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে প্রতিষ্ঠানটি। তবে বাস্তবে কী ঘটবে তার জানতে অপেক্ষা করতে হবে অনেকটা সময়। যমুনা গ্রুপের বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বলেন, একটি দেশীয় উদ্যোগ হিসেবে আমাদের পাশে আরেকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে পেয়ে আমরা সত্যিই আনন্দিত। যমুনার এই বিনিয়োগ ধারাবাহিক বিনিয়োগের অংশ এবং পরবর্তী ধাপেও তাদের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এই বিনিয়োগ ইভ্যালির ভবিষ্যত উন্নয়ন এবং ব্যবসা পরিধি বৃদ্ধিতে ব্যয় করা হবে। গ্রাহকদের পুরানো অর্ডার ডেলিভারি নিয়ে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, পুরানো অর্ডার যেগুলো পেন্ডিং সেগুলোর ডেলিভারীর ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিচ্ছি, প্রয়োজনে আমরা আরো বিনিয়োগ এর ব্যবস্থা করব বিনিয়োগ নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ইসলাম বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উন্নয়নে আমরা দেখছি যে, স্থানীয় ইকমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে আমাজন, চীনের ক্ষেত্রে আলিবাবা। তেমনি বাংলাদেশে ইতোমধ্যে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করেছে দেশীয় ইকমার্স ইভ্যালি। শুধু দেশের সাধারণ মানুষের স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছে। যমুনা গ্রুপ দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। এখন থেকে ইভ্যালি এবং যমুনা গ্রুপ সেই স্বপ্নপূরণে একে অপরের অংশীদার হলো। ইভ্যালি ও যমুনা গ্রুপের এই অংশীদারিত্বকে  স্বাগত জানিয়ে যমুনা গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মনিকা ইসলাম বলেন, দেশের বাজারে মানসম্পন্ন পণ্য ও সেবা নিয়ে যমুনা গ্রুপ ব্যবসা করে আসছে। বাংলাদেশে সবথেকে বড় অফলাইন মার্কেটপ্লেস যমুনা ফিউচার পার্ক। আর এখন সবচেয়ে বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেস গড়ে তোলার জন্য ইভ্যালির সাথে থাকবে যমুনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং দেশের ই-কমার্স খাতকে একটা মজবুত অবস্থানে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইভ্যালির সৎ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের প্রতি বিশ্বাস রেখে দেশের এই করোনাকালীন দুঃসময়ে দেশের অর্থনীতিকে চাংগা রাখতে তাদের পাশে  এসে দাড়িয়েছি। যমুনা গ্রুপের পরিচালক (অ্যাকাউন্টস) শেখ ওয়াদুদ বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনা এর সময়ে আমরা দেশীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চাই। এই বিনিয়োগ নিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য আমরা ধাপে ধাপে প্রকাশ করবো।

আরও পড়ুন:

বিষয়: