ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৬ জুন ২০২৪

জামানতবিহীন ঋণ পাবে তরুণরা


নিউজ ডেস্ক
265

প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১
জামানতবিহীন ঋণ পাবে তরুণরা



শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বিটাক (বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র) থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকার তরুণ-তরুণীদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে। ১৮ থেকে ৩৫ বছরের বাংলাদেশিরা সহজ শর্তে জামানতবিহীন এই ঋণ পাবেন। কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত এই ঋণ দেওয়া হবে। ঋণ পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হবে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। সূত্র জানায়, কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে ‘বঙ্গবন্ধু যুব ঋণ’-এর আওতায় বিটাকের এই ঋণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সম্প্রতি এ  বিষয়ে কর্মসংস্থান ব্যাংকের সঙ্গে বিটাকের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। বিটাকের পরিচালক ড. সৈয়দ মো. ইহসানুল করিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরকার এই ঋণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বিটাক থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর অনেকে কাজ না পেয়ে ঘরে বসে থাকেন। প্রশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের কর্মক্ষম করতেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ১৮ বছরের কম এবং ৩৫ বছরের বেশি বয়সীরা এই ঋণ পাবেন না। এই ঋণের হার ৯ শতাংশের বেশি হবে না। এরই মধ্যে এ বিষয়ে বিটাকের সঙ্গে কর্মসংস্থান ব্যাংকের একটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে। ঊর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা বলেন, এই ঋণ পেতে হলে বাংলাদেশের যুবক-যুবতি হতে হবে। সঠিকভাবে ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে কি না তা নজরদারি করবে বিটাক এবং কর্মসংস্থান ব্যাংক। বিটাক থেকে প্রশিক্ষণের পর বঙ্গবন্ধু যুব ঋণ গ্রহণ করে অনেকেই আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে। সমঝোতা স্মারক চুক্তিতে উল্লেখ আছে, বিটাক থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর বিটাকের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যাচাই করে দেখবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণ-তরুণী ঋণ নিয়ে কাজে লাগাতে পারবেন কি না। প্রয়োজনে বিটাক থেকে ঋণ পেতে আগ্রহী তরুণ-তরুণীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ প্রদানের সুপারিশ জানিয়ে কর্মসংস্থান ব্যাংকে চিঠি লিখবেন। চুক্তিতে বলা হয়েছে, ‘বঙ্গবন্ধু যুব ঋণ’-এর আওতায় ২০ হাজার টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে। এই ঋণ পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছর সময় দেওয়া হবে। প্রকল্পের ধরন অনুযায়ী ঋণ পরিশোধে প্রতি মাসে কিস্তি জমা দিতে হবে। প্রতি মাসে কিস্তি জমা না দিয়ে প্রতি তিন মাস পর, ছয় মাস পর, বার্ষিক বা এককালীন কিস্তি হিসেবেও পরিশোধ করতে পারবেন। এই ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। তবে ঋণ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ এই হার পরিবর্তন করে আরো কমাতে পারে। ঋণগ্রহীতাকে বিটাকের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রকল্প পরিচালনা করতে হবে। প্রতি তিন মাসে অবশ্যই ঋণগ্রহীতাকে একবার হলেও প্রকল্পের অগ্রগতি, ঋণ সম্পর্কিত তথ্য বিটাকের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। যথাযথ তথ্য-প্রমাণও জমা দিতে হবে। চুক্তিতে জানানো হয়েছে, তরুণ-তরুণীদের আত্মমর্যাদাশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এই ঋণ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। করিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে এই ঋণ ভূমিকা রাখবে। চুক্তিতে আরো বলা হয়েছে, বিটাক থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, প্রতিভাবান, আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রকল্প গ্রহণে আগ্রহী যুবদের ঋণ প্রদানের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা-উপজেলাভিত্তিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের ডাটাবেইস তৈরি করে বিটাক থেকে কর্মসংস্থান ব্যাংকের কাছে পাঠাতে হবে। প্রশিক্ষণকালে বিজনেস প্ল্যান তৈরি শেখাতে হবে। ঋণ পরিশোধসংক্রান্ত তথ্য বিটাক থেকে প্রতি তিন মাস পর সংগ্রহ করতে হবে। বিটাক প্রশিক্ষণ, ঋণ বিতরণ ও আদায়সংক্রান্ত তথ্য অটোমেশনের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করবে। কর্মসংস্থান ব্যাংক এবং বিটাক যৌথভাবে ঋণ আদায় সম্পর্কিত কাজ করবে। সমঝোতা স্মারকের কোনো চুক্তি অমান্য করলে তা মানতে বিটাক থেকে ঋণগ্রহীতাকে তিন মাস সময় দিয়ে নোটিশ দেওয়া হবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, চাকরির বাজার খুবই খারাপ। যুবসমাজের বেকারত্ব দূর করতে স্বল্প সুদের এই ঋণ সুফল বয়ে আনবে। কাদের এই ঋণ প্রয়োজন এবং কারা কাজে লাগাতে পারবে তা সঠিকভাবে যাচাই করে প্রদান করতে হবে। কোনো ধরনের স্বজনপ্রীতি যেন না হয় সে বিষয়ে অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে। সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত ব্যক্তিরা এই ঋণ পেলে কাজে লাগাতে পারবেন।

আরও পড়ুন:

বিষয়: