ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৬ জুন ২০২৪

২০২০ সালে রেমিট্যান্স আয় বাড়া স্বল্প কয়েক দেশের মধ্যে বাংলাদেশ: প্রতিবেদন


নিউজ ডেস্ক
251

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১
২০২০ সালে রেমিট্যান্স আয় বাড়া স্বল্প কয়েক দেশের মধ্যে বাংলাদেশ: প্রতিবেদন



কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা সত্ত্বেও অল্প যে কয়েকটি দেশের রেমিট্যান্স আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, তার মধ্যে জায়গা করে নিয়ে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ তৈরি করেছে বাংলাদেশ। করোনা বিপর্যয়ের মধ্যেও ২০২০ সালে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয় ছিল ১৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয় ছিল ১৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।

করোনাভাইরাসের আঘাতে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই চাকরি ও মজুরির ক্ষেত্রে ধস নেমেছে এবং তা বিশেষ করে অভিবাসী শ্রমিকদের আয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।তবে বাংলাদেশের পাশাপাশি রেমিট্যান্স আয় বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে মেক্সিকো এবং পাকিস্তানও। ২০১৯ সালের তুলনায় মেক্সিকোর রেমিট্যান্স আয় বেড়েছে ৯ শতাংশ এবং পাকিস্তানের বেড়েছে ৪ শতাংশ।

ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) প্রকাশিত প্রতিবেদন 'কোভিড-নাইন্টিন অ্যান্ড মাইগ্র্যান্ট রেমিট্যান্স: অ্যা হিডেন ক্রাইসিস লুমিং?' থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়।সেখানে যে তিনটি দেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তারা সে সময়ে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আয় করে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও নিজ দেশে থাকা প্রিয়জনকে ভালো রাখতে অভিবাসী শ্রমিকদের প্রচেষ্টার ফলাফলই এই রেমিট্যান্স বৃদ্ধি।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণগুলো ২০২০ সালের তুলনায় খুবই ভিন্নধর্মী। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশে চাকরি হারিয়ে সঞ্চিত অর্থ নিয়ে শ্রমিকদের দেশে ফিরে আসা।ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ ২০১৯ সালে এবং পাকিস্তান ২০২০ সালে যে রেমিট্যান্স কর উদ্দীপনা প্রণয়ন করেছে, তা এই রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। যদিও লন্ডনভিত্তিক গ্লোবাল বিজনেস ইন্টেলিজেন্স বলছে, এই উন্নতিগুলো খুব সাময়িক।

বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বে রেমিট্যান্স আয়ের ৭ শতাংশ পতন ঘটেছে, যা ২০০৯ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে হওয়া ৫ শতাংশ হ্রাসকেও ছাড়িয়ে গেছে।এছাড়াও বিশ্ব অর্থনীতির ওপর মহামারির দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এবং এসব গুণনীয়কের এককালীন প্রভাব হিসেবে ২০২১ সালে আরও ৭ শতাংশ রেমিট্যান্স পতনের আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে ইআইইউ।

উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এটি একটি দুঃসংবাদ, যেখানে তারা ইতোমধ্যেই মহামারির নানা চ্যালেঞ্জ ও সংকটের সম্মুখীন।বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জন্য এই পরিস্থিতি একটি বড় সংকট তৈরি করতে পারে। কারণ কোভিড পূর্ববর্তী অর্থঘাটতির ফলে এই দুটি দেশ রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। পাকিস্তানে ২০১৯ সালে এই নির্ভরতার পরিমাণ ছিল মোট আয়ের ৪০ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ২৯ শতাংশ।

এশিয়ার ব্যাতিক্রমী হয়ে ওঠা

এশিয়ার অন্য তিন বৃহৎ দেশ- চীন, ভারত ও ভিয়েতনামে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে রেমিট্যান্স আয়ের পতন ঘটেছে যথাক্রমে ১৩, ৯ ও ৮ শতাংশ।চীন তাদের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ক্রেডিটের খুব কম অংশের জন্যই রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরশীল (২০১৯ সালে তা ছিল মাত্র ২ শতাংশ)। চীনের অর্থনীতিতে বহুদিন ধরেই উদ্ধৃত আয় থাকে এবং ২০২০ সালে করোনা মহামারিতে বাণিজ্যিক সংকটের মধ্যেও তাদের রপ্তানি বাণিজ্য প্রাণবন্তই ছিল বলা যায়।

ভিয়েতনামেও একই অবস্থা। ২০১৯ সালে দেশটি তাদের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ক্রেডিটের মাত্র ৬ শতাংশ পরিমাণে রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তবে ভারত সে তুলনায় কিছুটা চাপে রয়েছে। ২০১৯ সালে দেশটির কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ক্রেডিটের ১৩ শতাংশ ধরা হয়েছিল রেমিট্যান্স আয় খাতে।


আরও পড়ুন:

বিষয়: