ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৬ জুন ২০২৪

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের জন্য নতুন প্রণোদনার সুপারিশ সিপিডির


নিউজ ডেস্ক
148

প্রকাশিত: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের জন্য নতুন প্রণোদনার সুপারিশ সিপিডির



করোনাভাইরাস সঙ্কট থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে পিছিয়ে থাকা ছোট উদ্যোগ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানকে প্রাধান্য দিয়ে দ্বিতীয় দফায় স্টিমুলাস প্যাকেজ প্রণয়নের সুপারিশ করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।এছাটা সুবিধাভোগীদের কাছে দ্রুত এর সুবিধা পৌঁছাতে নতুন প্যাকেজে ব্যাংকের ভূমিকা আরও কমানোর পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।সিপিডির নিয়মিত আয়োজন "ইনডিপেনডেন্ট রিভিউ অব বাংলাদেশ'স ডেভেলপমেন্ট (আইআরবিডি) প্রোগ্রাম"-এর আওতায় দেশের অর্থনীতির গতি প্রকৃতি তুলে ধরতে আয়োজন করা সংবাদ সম্মেলনে রোববার এমন সুপারিশ করা হয়।

অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় সিপিডির সিনিয়র ফেলো তাওফিকুল ইসলাম খান বলেন, অর্থনীতির সব খাত করোনার ক্ষতি থেকে সমানভাবে পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে পারছে না। বড় ও মাঝারি খাত এগিয়ে থাকলেও মাইক্রো ও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলো অনেকটাই পিছিয়ে। এ হিসাবে বর্তমান পুনরোদ্ধারের গতি কে-শেপড, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থার অবনতি হচ্ছে।তিনি এ সময় বলেন, করোনা থেকে পুনরুদ্ধারে সরকারের ঘোষণা করা প্রণোদনা সব খাতে সমানভাবে বিতরণ হয়নি। জানুয়ারি পর্যন্ত কৃষি খাতের প্রণোদনার অর্ধেকও বিতরণ হয়নি। ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় ছোট খাতের উদ্যোক্তারা প্রণোদনা পাচ্ছেন না।

তিনি আরও বলেন, বিতরণ করা প্রণোদনার টাকা কারা পাচ্ছেন, এ প্রণোদনার কতটুকু ইচ্ছাকৃত খেলাপীদের হাতে যাচ্ছে, আর কতটুকু অনাদায়ী থাকার আশঙ্কা রয়েছে- এসব বিষয়ে সার্বিক পর্যালোচনা প্রয়োজন। পাশাপাশি যারা প্রণোদনা পাননি, তাদের জন্য নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা প্রয়োজন। আর অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ছোট উদ্যোক্তাদের অর্থপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে এ প্রনোদনায় ব্যাংকের ভূমিকা কমাতে হবে।

করোনার সময়েও দেশের সামষ্টিক মূল সূচকগুলো ভালো রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাওফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণে বড় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য থাকলেও সর্বশেষ হিসাবে তা বেড়েছে ৮ শতাংশ। রপ্তানিতে এক শতাংশের মতো নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হলেও আমদানি কমে আসা, প্রবাসী আয় বৃদ্ধির কারণে ব্যালেন্স অব পেমেন্টের অবস্থাও ভালো। তবে ব্যক্তি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে আসার সঙ্গে কমেছে বিনিয়োগ।

তিনি আরও বলেন, প্রণোদনার অর্থ বিতরণের পরেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে অলস টাকার পাহাড় জমা হয়েছে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকে বাড়তি তারল্যের পমরমাণ ২.০৫ লাখ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বাড়তি তারল্য দ্বিগুণের বেশি। এ অবস্থায় করোনা বাস্তবতা থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সম্প্রসারণমূলক মুদ্রা ও রাজস্ব নীতি অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি।সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে কোনো সঙ্কটে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যয় বাড়িয়ে জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করা পুনরুদ্ধারের একটি জনপ্রিয় অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া।

সরকারের ব্যয় বাড়লে, জনসাধারণের কাছে অর্থ প্রবাহ বাড়লে পণ্য ও সেবার চাহিদা বৃদ্ধির মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকে। এ সুযোগ কাজে না লাগিয়ে এ কঠিন সময়ের মধ্যেও সরকারের ব্যয়ে সংকোচন করা হয়েছে। তিনি বলেন, করোনার সঙ্কটে বাজেট ঘাটতি জিডিপির সাড়ে ৬ শতাংশে উন্নীত করার সুপারিশ থাকলেও অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে সরকারের আয়ের চেয়ে ব্যয় কম হয়েছে।

করোনার এ দুঃসময়ে সঞ্চয়ী না হয়ে সরকারের ব্যয় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, পল্লী এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে। পল্লী অবকাঠামো সংস্কারের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া জোরদার করতে হবে।অর্থায়নের উৎস সম্পর্ক তিনি বলেন, বিদেশ থেকে এখনো কম সুদে ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া ব্যাংকেও প্রচুর উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। এ অবস্থায় বাজেট ঘাটতির চিন্তা না করে সরকারের বাজেটের আকার বাড়ানো উচিত।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় বর্তমানে তিন লাখের বেশি খেলাপী রয়েছে। এখানের ব্যবসায়ীদের ইচ্ছাকৃত খেলাপী হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এ অবস্থায় প্রণোদনার ঋণের মেয়াদ সুনির্দিষ্ট করতে হবে।ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে বিতরণ করা প্রনোদনার ঋণকে তিনি মেয়াদী ঋণে পরিণত করার পরামর্শ দেন।


আরও পড়ুন:

বিষয়: