তিস্তা সেচ প্রকল্পে হাজার কোটি টাকার স্বপ্ন
নিউজ ডেস্ক
163
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারীফেব্রুয়ারি ২০২০
তিস্তা সেচ প্রকল্পের পরিধি আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে এক লাখের বেশি হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আসবে।ফলে বছরে অতিরিক্ত প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন বাড়বে। একইসঙ্গে অন্যান্য খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়বে ৫ লাখ মেট্রিক টনের বেশি। যার বর্তমান বাজার মূল্য এক হাজার কোটি টাকা। এর পাশাপাশি ৮৬ লাখ জনদিন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তিস্তা সেচ প্রকল্প এলাকার সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় সেচের আওতা বাড়বে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অধিকতর উন্নীতকরণ, পরিবেশ তথা জীব বৈচিত্র রক্ষা ও প্রকল্প এলাকায় বসবাসরত ৩০ লাখ জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদ পযর্ন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি নীলফামরী জেলার সদর, সৈয়দপুর, কিশোরগঞ্জ, ডিমলা ও জলঢাকা, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, খানসামা ও চিরিবন্দর এবং রংপুরের গঙ্গাচড়া, সদর, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জে বাস্তবায়িত হবে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) মন্টু কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, তিস্তা ব্যারেজের পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। সেচ প্রকল্প সব সময় দেশের জন্য ইতিবাচক। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বছরে হাজার কোটি টাকার ফসল মিলবে বলে আশা করছি।
প্রকল্পের আওতায় ৭৭১ কিলোমিটার খাল ও সেচ কাঠামো শক্তিশালীকরণ, ৭২ কিলোমিটার সেচ পাইপ স্থাপন, ১ হাজার ৮৫টি সেচ কাঠামো নির্মাণ ও মেরামত করা হবে। এছাড়া ২৭টি কালভার্ট, চারটি সেতু, ৬০টি নিকাশ কাঠামো, ২০টি রেগুলেটর নির্মাণ ও ৬টি রেগুলেটর মেরামত করা হবে। এর পাশাপাশি ২৭০ হেক্টর জলাশয় পুনঃখনন, সাড়ে ৯ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা ও ফুটপাত স্লাব ও ৬৮ কিলোমিটার পরিদর্শন রাস্তা মেরামত করা হবে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচের পানির অভাবে প্রকট শস্যসংকট একটি চিরন্তন সমস্যা। শুষ্ক মৌসুমে তো বটেই আমন মৌসুমেও খরা দেখা দেয়। একমাত্র তিস্তা ছাড়া অন্যান্য ছোট নদী এবং খালে পানি প্রবাহ খুবই কম। তাই তিস্তা নদীতে ব্যারেজ নির্মাণের মাধ্যমে এই অঞ্চলে সেচ প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা ব্রিটিশ আমলেই সৃষ্টি হয়। লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গুড্ডিমারী ইউনিয়নের পিত্তিফোটা মৌজার দোয়ানী নামক স্থানে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যারেজ নির্মিত হয়। প্রকল্পের আওতায় ৭৯ হাজার ৩৭৮ হেক্টর জমি সেচের আওতায় এনে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন বাড়ানো হয়। এছাড়া তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে বুড়িমারী স্থল বন্দরের কার্যকারিতাও বাড়ে।
তিস্তা ব্যারেজের ওপর দিয়ে সড়ক যোগাযোগের ফলে লালমনিরহাট জেলা থেকে রাজধানীসহ সারা বাংলাদেশের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমে গেছে। এতে পণ্য পরিবহন ব্যয় কমেছে। এই ব্যারেজের উজানে তিস্তা নদীর বামতীর বরাবর অ্যাফ্লোক্স বাঁধ ঠ্যাংঝারা বর্ডার (ভারত) পর্যন্ত বাঁধ নির্মিত হয়েছে। ফলে এই অংশের সাত কিলোমিটার নদী ভাঙন হতে মুক্তি পেয়েছে। উজানের বালুময় জমি উর্বর ফসলি জমিতে পরিবর্তিত হওয়ায় কৃষিতে ব্যপক উন্নতি হয়েছে। ৬ হাজার হেক্টর ভূমি নদী গর্ভ হতে উদ্ধার পূর্বক ফসলি জমিতে পরিণত করা সম্ভব হয়েছে। তিস্তা ব্যরেজ নির্মাণের ফলে অনাবাদি জমি জমি ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। নতুন প্রকল্পের ফলে বছরে আরো হাজার কোটি টাকার ফসল মিলবে।
আরও পড়ুন:
অথনীতি সম্পর্কিত আরও
প্রচ্ছন্ন রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা চায় বিজিএপিএমইএ
১৩ জুন ২০২৪
ক্যাপিটাল গেইনে কর আরোপ প্রস্তাব থাকছেনা চূড়ান্ত বাজেটে
১২ জুন ২০২৪
ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা
১১ জুন ২০২৪
ইউরোপসহ ৩৮ দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের আম
১০ জুন ২০২৪
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন: অর্থমন্ত্রী
০৮ জুন ২০২৪
৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট পেশ আজ
০৬ জুন ২০২৪