ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৬ জুন ২০২৪

শেয়ারবাজার জরুরি সেবাভুক্ত কি-না জানতে চেয়ে চিঠি


নিউজ ডেস্ক
115

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২০
শেয়ারবাজার জরুরি সেবাভুক্ত কি-না জানতে চেয়ে চিঠি



ডেস্ক রিপোর্ট : চলমান সাধারণ ছুটিতে শেয়ারবাজার জরুরি সেবাভুক্ত কি-না তা নিয়ে ধোঁয়াশায় আছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তারা এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চাইলে তারাও পড়েছে বিপাকে। কারণ বিষয়টি তাদের কাছেও স্পষ্ট নয়। এর প্রেক্ষিতে বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার হতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে তারা। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বিষয়টি জানতে চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। তবে পুঁজিবাজার যদি জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত না হয়ে থাকে তাহলে সেটিকে জরুরি সেবাভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়নি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা একটি অনলাইন নিউজপোর্টালকে বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যে পুঁজিবাজারে লেনদেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে এই খাতটি জরুরি সেবাভুক্ত কি-না সে সম্পর্কে স্পষ্ট হওয়া দরকার। জানা গেছে, পুঁজিবাজার জরুরি সেবাভুক্ত না হলে সাধারণ ছুটিতে লেনদেন শুরু হওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। তবে জরুরি সেবাভুক্ত হলেও যে ছুটিতে লেনদেন শুরু হবে, সে বিষয়টিও নিশ্চিত নয়। কারণ ছুটিতে লেনদেন শুরু করার জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ বিদ্যমান আইনে কিছু ছাড় চেয়েছে। আর এসব ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া জন্য প্রয়োজন কমিশনের সম্মতি। কিন্তু বর্তমানে বিএসইসিতে কোরাম সংকট থাকায় কমিশন বৈঠক সম্ভব নয়। এমন অবস্থায় কী করণীয় সেটি নিয়েও ভাবছে বিএসইসি উল্লেখ, নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) মহামারি ঠেকাতে গত ২৪ মার্চ সরকার সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে কয়েক দফায় তা বাড়ানো হয়, যা আগামী ১৬ মে পর্যন্ত চলবে। সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের পুঁজিবাজারও বন্ধ আছে। যতবার সাধারণ ছুটির মেয়াদ বেড়েছে, ততবারই তার সঙ্গে মিল রেখে বেড়েছে পুঁজিবাজার বন্ধের মেয়াদ। তবে এরই মধ্যে পুঁজিবাজারে লেনেদন শুরু দাবি করেছে বিনিয়োগকারী ও ব্রোকারদের একাংশ। তাদের যুক্তি, করোনা সংকটের মধ্যেও বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাজার চালু আছে, তাই বাংলাদেশ এর বাইরে থাকতে পারে না। তাছাড়া লেনদেন বন্ধ থাকার কারণে সকল ব্রোকারহাউজেরই আয় বন্ধ, অথচ স্টাফদের বেতন ও অফিস ভাড়াসহ নানা খাতে ব্যয় ঠিকই আছে। অন্যদিকে, লেনদেন বন্ধ থাকায় করোনায় আর্থিক সংকটে পড়া অনেক বিনিয়োগকারী চাইলেও তাদের বিনিয়োগ থেকে কিছু টাকা তুলে নিয়ে জরুরী প্রয়োজন মেটাতে পারছেন না। তাদের অনেকে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এর প্রেক্ষিতে গত ৩ মে ডিএসইর পক্ষ থেকে চলতি মাসের ১০ তারিখ থেকে পুঁজিবাজারে লেনদেন চালুর জন্য কমিশনের সম্মতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। এছাড়া চিঠিতে বিদ্যমান বিভিন্ন আইনের কিছু শর্ত শিথিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এসব বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত ও সম্মতি পেলে স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষে লেনদেন চালু করা সম্ভব বলে ডিএসইর চিঠিতে জানানো হয়। বিএসইসি ওই চিঠি পাওয়ার পর তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে তাদের মতামত চায়। মন্ত্রণালয় বিএসইসিকে জানিয়ে দেয়, লেনদেন শুরু করা না করার বিষয়টি একান্তই বিএসইসির নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কিছু বলার নেই। তবে পুঁজিবাজার চলমান সাধারণ ছুটিতে জরুরি সেবাভুক্ত হিসেবে বিবেচিত হবে কি-না সে বিষয়ে তারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলতে পারে। এর প্রেক্ষিতেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছে আলোচিত চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। উল্লেখ, সাধারণ ছুটি ঘোষণা সংক্রান্ত প্রথম প্রজ্ঞাপন থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রজ্ঞাপনেই কিছু খাতকে জরুরি সেবাভুক্ত হিসেবে বর্ণনা করে সেগুলোকে এর আওতা মুক্ত রাখা হয়। যেমন-প্রজ্ঞাপনে ব্যাংক লেনদেনকে জরুরি সেবাভুক্ত হিসেবে অভিহিত করে লেনদেনের সময় নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। কিন্তু কোনো প্রজ্ঞাপনেই পুঁজিবাজারের বিষয়টির কোনো উল্লেখ ছিল না। ফলে এটি সাধারণ ছুটির আওতায় পড়বে, না-কি জরুরি সেবাভুক্ত খাত হিসেবে আওতার বাইরে থাকবে তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য এপ্রিল মাস পর্যন্ত কোনো পক্ষ উদ্যোগও নেয়নি। যদি করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সাধারণ ছুটির মেয়াদ আরেক দফা বাড়ানো হয় এবং তার আগে পুঁজিবাজার জরুরি সেবাভুক্ত ঘোষণা না করা হয়, তাহলে ঈদের আগে লেনদেন শুরুর বিষয়টি অনিশ্চিতই থেকে যাবে। তাতে পুঁজিবাজারের অনেক ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর দুর্ভোগ চরমে উঠবে।

আরও পড়ুন:

বিষয়: