ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৬ জুন ২০২৪

তিন কারণে পুঁজিবাজারের পতন : বিএসইসি চেয়ারম্যান


নিউজ ডেস্ক
121

প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারীফেব্রুয়ারি ২০১৯
তিন কারণে পুঁজিবাজারের পতন : বিএসইসি চেয়ারম্যান



স্টাফ রিপোর্টার : পুঁজিবাজারে মূলত তিনটি কারণে পতন হচ্ছে। এবং গত দুই মাসে যে পরিমাণে সূচক কমেছে তার কারণ হচ্ছে বিদেশীদের বিক্রয় এবং গ্রামীণ ফোনের ইস্যু বলে জানান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন। বৃহস্পতিবার জীবন বীমা টাওয়ারে পুঁজিবাজার সংবা‌দিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কট জার্না‌লিস্টস ফোরামের ‌(সিএম‌জেএফ) কার্যালয় ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন তিনি এ কথা বলেন। চেয়ারম্যান বলেন, পতনতো শুরু হয়েছে যখন এনবিআর চেয়ারম্যান বললো সবাইকে ইনভেস্ট করতে হলে টিআইএন নাম্বার লাগবে। এরপর যখন আমরা তার ভুল ভাঙালাম এবং এটা সংশোধন করলো। এরপর গ্রামীণফোনের সাথে বিটিআরসির যে একটা ঝামেলা শুরু হলো। এটা শুধু গ্রামীণফোনের ক্ষতি করেনি, মার্কেটের কাঠামো ধ্বংস করেছে। কারণ বিদেশিরা যখন আসে তখন ফান্ডামেন্টাল শেয়ার দেখে। গ্রামীণফোনের পাশাপাশি বিদেশিরা অলিম্পিক, ইউনাইটেড পাওয়ার এবং স্কয়ার ফার্মার শেয়ার কিনেছে। এবং যখন বিক্রি শুরু করেছে তখন শুধু গ্রামীন ফোন নয় সবগুলোই বিক্রি করেছে। সম্প্রতি আরেকটা বিষয় চলছে যে টাকার ডিভ্যালুয়েশন হবে। আজকে অর্থমন্ত্রী এটা ক্লিয়ার করে দিয়েছেন যে ডিভ্যালুয়েশন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, টাকার ডিভ্যালুয়েশন করবেন না। ডিভ্যালুয়েশন করলে এক্সপোর্টাররা গেইনার হবে কিন্তু দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাবে। ডিভ্যালুয়েশনের আতঙ্কে বিদেশীরা তাদের শেয়ার বিক্রি করছে। তারা গ্রামীণফোনের সাথে স্কয়ার ফার্মা, ইউনাইটেড পাওয়ার, বিএটিবিসি বিক্রি করছে। শুধুমাত্র গ্রামীণফোন আর বিএটিবিসি বিক্রি করার ফলে বিগত দুই মাসে ১৭৪ পয়েন্ট পরেছে। স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, ইউনাইটেড পাওয়ার, বিএটিবিসি এবং অলিম্পিক এই ৫টি কোম্পানি মার্কেট পতনের জন্য ৮০ শতাংশই দায়ী। বিগত নয় মাস কোন আইপিও নেই, তারপরেও বাজার কেন পড়ে গেল, কেন পড়ে যাচ্ছে। মানহীন আইপিও কি এই প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, জেএমআই সিরিঞ্জকে ১০ টাকায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, সেই শেয়ার এখন ৪০০ টাকা। ১০ টাকায় অনুমোদন দেওয়া বিবিএস ক্যাবলস ১৫৭ টাকায় উঠেছিল, আজ ৮০ টাকায় তা বিক্রি হচ্ছে। আবার কোন কোম্পানির শেয়ার ৩ টাকায় ও ১ টাকায়ও নেমে গেছে। যে আইন আপনারা আমরা মিলে এবং জনমত যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রণয়ন করা হয়েছিল, সে আইনের ব্যাপ্তয় ঘটিয়ে একটি আইপিও দেওয়া হয়েছে কিনা? আইপিও দেওয়ার পর কত বছর প্রাইস সাস্টেইন করেছে এবং প্রত্যেকটা বিনিয়োগকারী লাভবান হয়েছে। তিনি বলেন, সেকেন্ডারি মার্কেটে যাওয়ার পর একটা পর্যায়ে নতুন শেয়ার এসেছে। ওগুলোর উৎপাদন নেই, অথবা যে প্রোডাক্ট করেছে সেগুলো নেই অথবা ম্যানেজমেন্ট দুষ্ট আছে, অনেকে পালিয়ে গেছে। পৃথিবীর কোন দেশে রেগুলেটররা এই গ্যারান্টি দেবে না এই আইপিও সারা বছর ফেস ভ্যালুর উপরে থাকবে। একমাত্র দেশ বাংলাদেশ যেখানে আইপিও আসার পরে ফেস ভ্যালুর উপরে লেনদেন হয়েছে এবং দরখাস্ত কয়েকগুন পড়েছে। তিনি আরও বলেন, বিদেশীরা শেয়ার বিক্রি করলে মার্কেট প্রেসার নিতে পারে না। বিদেশী যে বড় বড় হাউজ থেকে বিক্রি করে, তার ফলে ইনডেক্সের উপর প্রভাব পরে, এরকম বিক্রি করে সেখানে যত শেয়ারহোল্ডার আছে, যত বিনিয়োগকারী আছে তারা প্রভাবিত হয়। একটাকে দেখে আরেকটা প্রভাবিত হয়। এটা সাইকেলের মতো একটা চেইন হিসেবে কাজ করে। অনুষ্ঠানে অতিথির মধ্যে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী, ড. স্বপন কুমার বালা, খন্দকার কামালুজ্জামান, ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান, মিনহাজ মান্নান ইমন, ডিএসই ও সিএসইর সাবেক পরিচালক ছায়েদুর রহমান ও ডিবিএর সভাপতি শাকিল রিজভী বক্তব্য দেন। এবং সিএমজেএফ এর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও অর্থসূচক সম্পাদক জিয়াউর রহমান, সাবেক সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু এবং বর্তমান সভাপতি হাসান ইমান রুবেল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিএমজেএফ এর সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন।

আরও পড়ুন:

বিষয়: