ঢাকা বৃহস্পতিবার
২১ জানুয়ারীজানুয়ারী ২০২৪
০৬ জুন ২০২৪

বীমা খাতের অনিয়ম রোধে আইডিআরএ’র ১০ দফা


নিউজ ডেস্ক
177

প্রকাশিত: ০৮ মে ২০১৯
বীমা খাতের অনিয়ম রোধে আইডিআরএ’র ১০ দফা



স্টাফ রিপোর্টার : অনিয়ম যেন বীমা খাতের নিত্য অনুসঙ্গ। অনিয়ম থেকে খাতটিকে বের করে আনতে চেষ্টা করে যাচ্ছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এরই অংশ হিসেবে সংস্থাটি দশ দফা দিয়েছে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোকে। সংস্থাটি মনে করে এর মধ্যে সাধারণ বীমা খাতের কোম্পানিগুলোর অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব। বিশেষ করে কোম্পানিগুলো একাধিক হিসাব খুলে যে জালিয়াতী করছে; এই দফার মাধ্যমে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই জন্য কোম্পানিগুলোকে সময় দেওয়া হয়েছে ১৩ মে পর্যন্ত। জানতে চাইলে আইডিআরএ’র সদস্য ড. এম মোশাররফ হোসেন এফসিএ বলেন, আমাদের মূলকাজ হল গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে এ শিল্পের বিকাশ ঘটানো। এজন্য বীমাখাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই। এদিকে একটি সূত্র জানায় কোম্পানিগুলো তাদের পলিসিতে বড় ধরনের জালিয়াতি করছে। কোম্পানিতে যে পরিমাণ পলিসি ইস্যু হয়, কাগজপত্রে দেখানো তার অর্ধেকেরও কম। এক্ষেত্রে কোম্পানির নামে অনেকগুলো ব্যাংক একাউন্ট খোলা হয়। কিন্তু বাস্তবে একাউন্টের সংখ্যা কম দেখানো হয়। যে সব একাউন্ট আইডিআরএ’সহ নিয়ন্ত্রকসংস্থাগুলোর কাছে যাবে সেগুলোতে রাখা অর্থই কেবল কোম্পানির আয়ের হিসাবে দেখানো হয়। বাকী বেশ কিছু পলিসির তথ্য গোপন রাখা হয়। এগুলো শুধু কোম্পানির ভেতরের লোকজন জানে। এজন্য ব্যাংকে আলাদা একাউন্ট সংরক্ষণ করা হয়। আর কমিশন বাণিজ্যসহ অধিকাংশ অতিরিক্ত ব্যয় এসব একাউন্ট থেকে পরিশোধ করা হয়। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এখানে বিশেষ নিরীক্ষা বন্ধ ছিল। এখন এটি শুরু করা হয়েছে। তারমতে, নিরীক্ষার ফলে কোম্পানিগুলোর ভয়ের কিছু নেই। কারণ স্বচ্ছতা এলে বীমাখাতের প্রতি গ্রাহকের আস্থা বাড়বে। দীর্ঘমেয়াদে এতে কোম্পানিগুলোই লাভবান হবে। এ বিষয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, আমরা চাই বীমা খাতের উন্নয়ন। এর উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় আয়ে অবদান রাখতে। সেই লক্ষ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ১. আদায়কৃত প্রিমিয়াম জমাকরনের জন্য যে কোন তফসিলি ব্যাংকে জমাকরন(কালেকশন)০১(এক)টি হিসাব রাখতে হবে। কোনক্রমেই একাধিক ব্যাংক হিসাব প্রিমিয়াম জমাকরনের জন্য খোলা যাবেনা। বর্তমানে প্রিমিয়াম জমাকরণের জন্য একাধিক ব্যাংক হিসাব থাকলে যে কোন একটি রেখে বাকিগুলো আগামী ১০(দশ) কর্মদিবসের মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে। ২. প্রয়োজন অনুযায়ী(ক)মূলধন সংরক্ষণের জন্য ১ (এক)টি ব্যাংক হিসাব এবং (খ)অন্যান্য আয় জমাকরণের জন্য অপর ১ (এক) টি ব্যাংক হিসাব রাখা যাবে। ৩. দাবি পরিশোধের জন্য ১(এক) টি ও ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের জন্য ১(এক)টি ব্যাংক হিসাব রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রিমিয়াম জমাকরণ (কালেকশন) হিসাব থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ উক্ত হিসাব দুটিতে ফান্ড ট্রান্সফার করে নিতে হবে। ৪. কোন অবস্থাতেই দাবির টাকা নগদ পরিশোধ করা যাবেনা। ৫. শাখা কার্যালয়ের খরচসমূহ নির্বাহের ক্ষেত্রে প্রতিটি শাখায় একটি করে ব্যাংক হিসাব রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রিমিয়াম(কালেকশন)হিসাব থেকে ক্রসড চেক বা ফান্ড ট্রান্সফার ব্যতীত অন্য কোন অর্থ উক্ত ব্যাংক হিসাবসমূহে জমা করা যাবে না। ৬. শাখা কার্যালয়ের অন্য যে কোন আয়, কমিশন ফেরত ইত্যাদি ২(খ)নং ব্যাংক হিসাবে জমা করনের ব্যবস্থা করতে হবে। ৭. সকল লেনদেন ক্রসড চেকের মাধ্যমে করতে হবে ।দাপ্তরিক বিশেষ প্রয়োজনে ৫,০০০/(পাঁচ হাজার)টাকা পর্যন্ত নগদ ‍উত্তোলন করা যেতে পারে। ৮. উপর্যুক্ত নির্দেশনার আলোকে ব্যাংক হিসাবসমূহ বিন্যাস করে আগামী ২০ (বিশ) কর্মদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। ৯. বিনিয়োগ সংক্রান্ত পর্যন্ত FDR ব্যতীত প্রয়োজনীয় অন্য যে কোন বিষয়ে ব্যাংক হিসাব খোলার পুর্বে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন নিতে হবে। ১০. যে কোন পলিসিতে ১০,০০০/ (দশ হাজার)টাকার উপর বীমা স্ট্যাম্প প্রদেয় হরে তা অবশ্যই পে অর্ডার বা ক্রসড চেক মারফত পরিশোধ পূর্বক পৃথক চালানের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে।

আরও পড়ুন:

বিষয়: