ইনটেকের পর্ষদে কেডিএস ও এস আলম
নিউজ ডেস্ক
156
প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০২১
তথ্য-প্রযুক্তি খাতের ইনটেক লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত হয়েছে এস আলম গ্রুপ ও কেডিএস গ্রুপ। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ার কিনে শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন বৃহৎ এই দুই গ্রুপের প্রতিনিধি।
নতুন নিয়োগ পাওয়া পরিচালকেরা আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদে রয়েছেন। স্পন্সর ও পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ারধারনে বাধ্যবাধকতায় তারা শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হিসাবে পর্ষদে যুক্ত হয়েছেন। আগামী ২২ মার্চ কোম্পানীর বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচিত ১২ পরিচালক ও তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালকের বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নেওয়া হবে। নতুন পরিচালক যুক্ত হওয়ায় কোম্পানির সংকট কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন ইনটেক লিমিটেডের চেয়্যারম্যান এটিএম মাহবুবুল আলম।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে তিনি বলেন, "সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ১২ জন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক কোম্পানির নীতির প্রতি আজ্ঞাবাহী এবং পরিচালনা পর্ষদে তাদের উপস্থিতি কোম্পানিটির সুদূরপ্রসারী উন্নয়নে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে"। ২০০২ সালে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ইনটেক লিমিটেড। তবে এই খাতের ব্যবসায় ভালো করতে না পারায় অ্যাগ্রো ও ফিশ ফার্মিং শুরু করে। ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ৪০ একর জায়গায় কোম্পানিটির অ্যাগ্রো ও ফিশ ফার্মিং প্রকল্প রয়েছে।
২০১৯ সালের ১৫ জুলাই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সম্মিলিতভাবে স্পন্সর ও পরিচালকদের ৩০ শতাংশ এবং পরিচালকদের ২ শতাংশ শেয়ার ধারনে বাধ্যবাধকতা আরোপ করে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বিএসইসি চেয়্যারম্যান ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন এই শর্ত পরিপালনে কড়াকড়ি আরোপ করে নির্দেশনা জারি করে।
ইনটেক লিমিটেডের তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটিতে দুইজন পরিচালক, চেয়্যারম্যান ও একজন স্বতন্ত্র পরিচালক ছিলেন। সম্মিলিতভাবে এই পরিচালকরা কোম্পানিটির মাত্র ৩.৯৭ শতাংশ শেয়ারের মালিক ছিলেন। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার শর্ত পরিপালনে শুধুমাত্র চেয়্যারম্যান ছাড়া আগের পরিচালকদের বাদ দিয়ে ১২ জন শেয়ারহোল্ডার নির্বাচিত করা হয়, যারা কোম্পানিটির ২ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছেন। বর্তমানে কোম্পানীটির মোট শেয়ারের ৩০.১৪ শতাংশ শেয়ার ধারন করছে কোম্পানীর বোর্ড অব ডিরেক্টরস।
ইনটেকের ভাইস-চেয়্যারম্যান ও পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন মধুমতি ব্যাংকের বর্তমান স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। তিনি কোম্পানীটির ৬,৩১, ৯২৬টি শেয়ার কিনেছেন। পুর্নগঠিত ইনটেকের পর্ষদে এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিসেস লিমিটেড, কোম্পানীটির ১৩.১৩ লাখ শেয়ার কিনে পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন।
শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন কেডিএস গ্রুপের চেয়্যারম্যান খলিলুর রহমান, যিনি ৬.২৬ লাখ শেয়ার কিনেছেন।এস আলম গ্রুপের প্রতিনিধি আতিকুল আলম চৌধুরী কিনেছেন ৬.৪০ লাখ শেয়ার। আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক এ.এন.এম. ইয়াহিয়া এবং আহামেদুল হক উভয়ে কিনেছেন ৬.২৭ লাখ করে শেয়ার।
এছাড়াও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক খন্দকার শাকিব আহমেদ ৬.২৭ লাখ, আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়্যারম্যান বদিউর রহমানের স্ত্রী সৈয়দা রাশিদা ইয়াসমিন কিনেছেন ৬.২৬ লাখ শেয়ার। ঢাকা কটন মিল কিনেছে ৬.৬০ লাখ, শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ৬.২৭ লাখ ও সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশ লিমিটেড কিনেছে ৬.৪৫ লাখ শেয়ার।২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কোম্পানীটির মোট আয় হয় ৯.১৩ কোটি টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ২৩% কম।
কর পরিশোধের পর এই অর্থবছরে কোম্পানিটির নীট মুনাফা হয়েছে ৪৬.২৮ লাখ টাকা, যা আগের বছরের চেয়ে ৬২ শতাংশ কম। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে নীট মুনাফা হয় ১.২৩ কোটি টাকা। চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের অর্ধ-বার্ষিকে মোট আয় ৪.৯২ কোটি টাকা। নীট মুনাফা হয় ৫৫.৬৬ লাখ টাকা। অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে মোট আয় আগের বছরের চেয়ে ৬ শতাংশ হ্রাস পেলেও মুনাফা বেড়েছে ৪৯ শতাংশ।
কোম্পানীটির আয়ের তিনটি উৎস ইন্টারনেট সার্ভিস, সফটওয়্যার ও অন্যান্য এবং ফিশারিজ খাত থেকে আয় হ্রাস পেয়েছে।ফিশারিজ থেকে কোম্পানীটির আয় কমলেও মোট আয়ের ৫৪ শতাংশ এসেছে এই খাত থেকে। ফিশারিজ থেকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ২.৬৫ কোটি টাকা আর ইন্টারনেট ও সফটওয়্যার থেকে এসেছে ২.২৫ কোটি টাকা।