লোকসান সঠিক দেখায়নি ইস্টার্ন কেবলস
নিউজ ডেস্ক
158
প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১
স্টাফ রিপোর্টার : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়াত্ত্ব কোম্পানি ইস্টার্ন কেবলসের ২০১৯-২০ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৬.৪৬ টাকার মতো বড় লোকসান হয়েছে। কিন্তু তারপরেও আর্থিক হিসাবে রয়ে গেছে নানা অনিয়ম। যার মাধ্যমে কোম্পানির প্রকৃত লোকসানের পরিমাণ আড়াল করা হয়েছে।
কোম্পানিটির ২০১৯-২০ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
ব্যবসায় মন্দার মধ্যে থাকলেও ইস্টার্ন কেবলসের শেয়ার দর আকাশচুম্বি। দূর্বল কোম্পানিটির শেয়ার দর বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি দাড়িঁয়েছে ১৪০.১০ টাকায়। এই অস্বাভাবিক দরের পেছনে রয়েছে ফ্রি ফ্লোট শেয়ারের পরিমাণ কম ও কারসাজি।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ অনুযায়ি ইস্টার্ন কেবলসের ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ কোটি ৪২ লাখ ৯৩ হাজার ৭৪৭ টাকা আয়কর সঞ্চিতি গঠন করা দরকার। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মাত্র ৩৪ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫৬ টাকার গঠন করেছে। এর মাধ্যমে ওই অর্থবছরে ৩ কোটি ৮ লাখ ১৯ হাজার ৮৯১ টাকার নিট লোকসান কম দেখানো হয়েছে। একইসঙ্গে শেয়ারপ্রতি ১.১৭ টাকা কম লোকসান দেখানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক হিসাব মান (আইএএস)-১২ অনুযায়ি, ইস্টার্ন কেবলস কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে ডেফার্ড ট্যাক্স গণনা করেনি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে ক্যাপিটাল ওয়ার্ক ইন প্রগ্রেস (ব্যবহার উপযোগী করার আগের অবস্থান) হিসেবে ৪৭ লাখ ৮০ হাজার ৮৮৮ টাকার সম্পদ দেখিয়ে আসছে। কিন্তু এই সম্পদকে দীর্ঘদিন অন্য হিসাবে স্থানান্তর না করার মাধ্যমে ইমপেয়ারম্যান্টের (বাজার দর কমে গেছে) মাধ্যমে লোকসান হওয়ার ইঙ্গিত দেয় বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। তবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এই লোকসানের কোন প্রভাব আর্থিক হিসাবে দেখায়নি।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকের কাছে ১ কোটি ৩১ লাখ ৭৪ হাজার ৬০০ টাকা পাওনা দেখিয়ে আসছে ইস্টার্ন কেবলস কর্তৃপক্ষ। যা আদায় নিয়ে শঙ্কা তৈরী হয়েছে। তারপরেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ কোন সঞ্চিতি গঠন করেনি। এর মাধ্যমে নিট লোকসান ও শেয়ারপ্রতি লোকসান কমিয়ে দেখানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য পাওনা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৯০ টাকা দেখিয়ে আসছে। এর বিপরীতেও কোন সঞ্চিতি গঠন করা হয়নি।
এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পার্টির কাছে দীর্ঘদিন ধরে পরে থাকা অর্থ আদায়ে চিঠি দিলেও তা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। কিন্তু ওই অর্থবাবদ আর্থিক হিসাবে ‘বেড ডেবট’ হিসেবে সঞ্চিতি গঠন করা হয়নি। এর মাধ্যমে কিছু ব্যয় কম দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
গ্রাচ্যুইটি হিসেবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ১০ কোটি ৬৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯৪৫ টাকার দায় দেখিয়েছে। কিন্তু কোম্পানির ম্যানেজমেন্টের হিসাব অনুযায়ি ২১ কোটি ৩৫ লাখ ৭ হাজার ২০ টাকার ফান্ড গঠনের দরকার। এ হিসাবে ১০ কোটি ৬৬ লাখ ২১ হাজার ৭৫ টাকার সঞ্চিতি ঘাটতি রয়েছে। যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে চার্জ বা হিসাব করা দরকার। কিন্তু তা না করার মাধ্যমে নিট লোকসান ও শেয়ারপ্রতি লোকসান কমিয়ে দেখানো হয়েছে।