বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ২০২০ সালে হজ করতে আগ্রহী অনেকে নিবন্ধনের জন্য পাসপোর্ট জমা দিলেও দীর্ঘ ছুটির কারণে ব্যাংক থেকে নিবন্ধন ভাউচার নিতে পারেননি। তাদের কথা বিবেচনা করেই সময় বাড়ানো হল।
“ইতোমধ্যে অনেকে টাকা জমা করতে না পারায় নিবন্ধন করতে পারেননি। এ অবস্থায় ২০২০ সালে সরকারি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নিবন্ধনের সুবিধার্থে নিবন্ধনের সময়সীমা ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হল।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যারা সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে প্রাক-নিবন্ধন করেছেন এবং নতুন যারা প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন করতে চান, তাদের সবার জন্যই এ সুযোগ প্রযোজ্য।
আর যারা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্যে ৬ লাখ ৭২ হাজার ১৯৯ ক্রমিক পর্যন্ত যারা আছেন, ‘আগে আসলে আগে নিবন্ধন’ ভিত্তিতে তাদের নিবন্ধন করা হবে।
পার্সপোর্ট ভেরিফিকেশনের সুবিধার্থে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধন কেন্দ্রে পাসপোর্ট দাখিল করতে হবে।
এবার হজে যেতে আগ্রহীদের জন্য তিন ধরনের প্যাকেজ রেখেছে সরকার। এর মধ্যে প্রথম প্যাকেজে চার লাখ ২৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় প্যাকেজে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় প্যাকেজে তিন লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করতে আগ্রাহীদের নিবন্ধন করতে আপাতত বিমান ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ বাবদ ১ লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ টাকা জমা দিতে হবে। এখন কোনো অবস্থাতেই এর বেশি টাকা জমা না দিতে সতর্ক করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই অর্থাৎ ৯ জিলহজ হজ হবে এবার। সে অনুযায়ী ২৩ জুন হজ ফ্লাইট শুরু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করে আসছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ।
সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ২০ হাজার জন হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
তবে বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে সবকিছুই এখন নির্ভর করবে সার্বিক পরিস্থিতির ওপর।
ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে সৌদি আরব বিদেশিদের ওমরাহর অনুমতি দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করেছিল আগেই। এখান পুরো দেশ রয়েছে লকডাউনে; মসজিদে জামাতে নামাজ পড়াও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জনসমাগম যাতে না হতে পারে, সেজন্য পবিত্র দুই নগরী মক্কা-মদিনায় এর মধ্যে দুই দিনের কারফিউও জারি করা হয়েছিল।
এ কারণে এখনই হজের পরিকল্পনা চূড়ান্ত না করে পরিস্থিতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছে সৌদি আরব।
প্রতিবছর হজের সময় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ২৫ লাখ মুসলমান সৌদি আরবে জড়ো হন। তারা মক্বা ও মদিনা শহরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। হজ মৌসুমে যে আয় হয় তা সৌদি আরবের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখে।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের আধুনিক ইতিহাসে হজ বাতিল হওয়া বিরল ঘটনা। সর্বশেষ ১৭৯৮ সালে একবার হজ বাতিল হয়েছিল। করোনাভাইরাস সঙ্কট দীর্ঘায়িত হলে এবারও তেমন কিছু ঘটতে পারে।
সূত্র: বিডিনিউজ