পিপলস লিজিংয়ের প্রধান কার্যালয়ে নেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা
নিউজ ডেস্ক
115
প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার : সকাল থেকেই পিপলস লিজিংয়ের প্রধান কার্যালয়ে টাকা নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন শত শত বিনিয়োগকারী। এমনকি রিজাইন লেটার জমা দিতেও এসে ফিরে যেতে দেখা গেছে এক কর্মকর্তাকে।
খেলাপী ঋণ ও আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় পিপলস লিজিং এর লাইসেন্স বাতিল ও কোম্পানিটির অবসায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে সম্মতিও দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। তবে চুড়ান্ত সম্মতির জন্য কবে নাগাদ হাইকোর্টে আবেদন আবেদন করা হবে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে।
শামীম রেজা নামের এক কর্মকর্তা জানান গণমাধ্যমের কাছে বলার মত আমাদের কিছু নেই। কারণ আমাদেরই এখন চাকরি নেই। আমরা আছি আতঙ্কের ভিতর। কোম্পানির অবসায়নের বিষয়টা পত্র পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ উপস্থিত হচ্ছেন না অফিসে।
টাকা ফেরত নিতে এসে মোহাম্মদ হানিফ নামের একজন আমানতকারী জানান আমি মোট ৮৪ লাখ টাকা এখানে জমা রেখে ছিলাম। ঈদের আগে ১০ লক্ষ টাকা উঠাতে পেরেছি। কিন্তু তারপর থেকে অনেকবার চেষ্টা করেও বাকি টাকা আর ফিরে পাচ্ছি না। এটাকে এখন ফেরত পাব কিনা এ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছি আমি সহ আমার পরিবার। ২০১৭ সাল থেকে স্বল্প মেয়াদে টাকা জমা রাখছিলেন তিনি। ১১ শতাংশ মুনাফা পাওয়ায় পিপলস লিজিং কে বেছে নেন হানিফ। এই পর্যায়ে এসে সাধারণ আমানতকারীদের টাকা সবার আগে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তার মতো সকল আমানতধারীদের।
নর্দান ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি মোহাম্মদ মনজুর মোর্শেদ এর সাথে কথা বলে জানা যায় সমন্বিতভাবে ৯ কোটি টাকা রাখা হয়েছে পিপলস লিজিংয়ে। এর মধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা উঠাতে পারলেও বাকিগুলো আটকে রয়েছে। অন্যান্যদের মত আমার মনেও টাকা ফেরত না পাবার সংশয় কাজ করছে বলে জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য আরেক নারী বিনিয়োগকারী জানান ৮ লাখ টাকার এফডিআর করেছিলাম আমি। কিন্তু এই মুহূর্তে কোনভাবে টাকাটা ফেরত পাচ্ছি না। এখন নিরুপায় হয়ে এফডিআর এর রসিদগুলো ফেরত নিয়ে যাচ্ছি।২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর ভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী, পিপলস লিজিংয়ে মোট আমানত রয়েছে দুই হাজার ৮৬ কোটি টাকা। পিপলস লিজিংয়ে এক হাজার ১৩১ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপি দেখানো হয়েছে ৭৪৮ কোটি টাকা, যা ৬৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। ধারাবাহিক লোকসানের কারণে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এ প্রতিষ্ঠান ২০১৪ সালের পর থেকে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এর মোট শেয়ারের ৬৭ দশমিক ৮৪ শতাংশই রয়েছে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে স্পন্সর ও পরিচালকদের হাতে রয়েছে ২৩ দশমিক ২১ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে।
সূত্র : অর্থসূচক