ঢাকা রবিবার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
১০ আগস্ট ২০২১

নিউজিল্যান্ডে সফরে নিজেদের মধ্যেও দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে না অনেক ক্রিকেটারের।


নিউজ ডেস্ক
180

প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২১
নিউজিল্যান্ডে সফরে নিজেদের মধ্যেও দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে না অনেক ক্রিকেটারের।



অনুশীলন, ম্যাচ, বিদেশ সফর; সবখানেই এক সঙ্গে থাকা। বছরের অধিকাংশ সময়ই একসঙ্গে থাকা হয় বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বদলে গেছে বাস্তবতা। লকডাউনের সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকতে হয়েছে সবাইকে। লম্বা বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরা বাংলাদেশ দল বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে আছে। এই সফরে নিজেদের মধ্যেও দেখা-সাক্ষাৎ হচ্ছে না অনেক ক্রিকেটারের। নিউজিল্যান্ড থেকে এমনই জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

২৪ ফেব্রুয়ারি ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছে কোয়ারেন্টিনে চলে যেতে হয় বাংলাদেশ দলের সবাইকে। প্রথম তিন দিন ছিলো পুরোপুরি আইসোলেশন। তিন দিন পর ৩০-৪০ মিনিটের জন্য বাইরে হাঁটার সুযোগ হয় ক্রিকেটারদের। গত ছয় দিনে সব মিলিয়ে তিনবার বাইরে বেরিয়েছেন তামিম, মুশফিক, মুস্তাফিজরা। বাইরে বের হলেও দলের সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে না। কারণ ৫-৭ জনের গ্রুপ করে ক্রিকেটারদের নিচে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সবার সঙ্গে দেখা না হলেও বাইরে মুক্ত হাওয়ায় শ্বাস নিতে পেরে স্বস্তি কাজ করছে ক্রিকেটারদের মাঝে। তামিম জানালেন, কয়েক দিন পরপর দেখা হওয়ার বিষয়টি তার কাছে মনে হচ্ছে কয়েক বছর। সোমবার এক ভিডিও বার্তায় ওয়ানডে অধিনায়ক বলেছেন, 'প্রথমবারের মতো যখন মুক্ত বাতাসে গিয়েছিলাম, একটু আজবই লাগছিল। কারণ, দুই-তিনদিন আমরা রুমের মধ্যে ছিলাম। তারপরে হঠাৎ করে আমাদের অনুমতি দেওয়া হলো যে, আমরা নিচে যেতে পারব।' 'তখন সবার সাথে দেখা হয়ে ভালো লাগল। মনে হলো অনেক বছর পরপর দেখছি একেকজনকে। যেহেতু নিচে মুক্ত বাতাসে যাওয়ার জন্য একটা গ্রুপ সেট করা থাকে, পাঁচ-সাত জনের গ্রুপে আমরা যাই। তো এখনও অনেক টিমমেট আছে, যাদের সাথে আমাদের দেখা হয়নি। তো যেটা বললাম, এটা ভিন্ন, চ্যালেঞ্জিং, তবে পাস হয়ে যাচ্ছে।' যোগ করেন তামিম।

করোনাকালে নিউজিল্যান্ডে কড়া নিয়মের কোয়ারেন্টিনে কঠিন সময়ই পার করতে হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। এই বন্দি দশা শেষ হবে বুধবার। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ দলের সবার করোনা পরীক্ষা করা হবে। সবার ফল নেগেটিভ এলে অষ্টম দিন, অর্থাৎ বুধবার থেকে জিম শুরু করতে পারবেন ক্রিকেটাররা। ছোট ছোট গ্রুপ হয়ে করতে পারবেন অনুশীলনও।

তামিম বলেন, 'কাল যদি আমাদের সবার কোভিড টেস্ট নেগেটিভ আসে, তাহলে পরশু থেকে জিম করতে পারব। এখানে দুটি জিম আছে নিচে, যেখানে আমরা গ্রুপে ভাগ হয়ে জিম করতে পারব। যদি সব ঠিকঠাক থাকে, ৮ নম্বর দিন থেকে ছোট ছোট গ্রুপে প্র্যাকটিসের জন্য অনুমতি দেওয়া হবে। আমরা মাঠে গিয়ে প্র্যাকটিস করতে পারব। আমি এটার দিকেই তাকিয়ে আছি। যখনই শুরু হয়ে যাবে, তখনই আশা করি আমাদের ফোকাসটা পুরোপুরি ক্রিকেটে ফিরে আসবে।'

কঠিন এই অবস্থার মধ্যেই অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সফরের পরীক্ষা দিতে হবে তামিমকে। অভিজ্ঞ এই ক্রিটোর অবশ্য আশাবাদী, 'অধিনায়ক হিসাবে আমার এটা প্রথম বিদেশ সফর, আমি আশাবাদী। আমি নিশ্চিত প্রথম ওয়ানডে শুরু হওয়ার আগে আমাদের যে প্র্যাকটিস সেশন হবে, সেখানে আমরা দল হিসাবে তৈরি হতে পারব। দলের সবার সাথে কথা বলে যা অনুভব করেছি, সবাই ভালো করতে চায় বাংলাদেশ দলের জন্য।'

তামিমের বিশ্বাস, পরিকল্পনা ও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে যেকোনো দলকে হারানোর জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ওপেনার বলেন, 'আমরা আশাবাদী দেখা যাক। যেটা আমি সব সময়ই বলি বাংলাদেশ দলের ওই সক্ষমতা সব সময়ই আছে। যদি আমরা আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করি, সবাই যদি আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারি, সবাই একসাথে ভালো পারফর্ম করি, আমরা যেকোনো দলকে হারাতে পারি। এটা আমি বিশ্বাস করি, আমি নিশ্চিত দলের সবাই এটা বিশ্বাস করে।'

সাড়ে ২৩ ঘণ্টা ধরে ঘরবন্দি অবস্থা, সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে না, নেই অনুশীলনের সুযোগ; তারপরও তামিম মনকে স্থির রেখেছেন। কারণ তার ধারণা ছিল, এরচেয়েও কঠিন অবস্থায় পড়তে হবে নিউজিল্যান্ডে। তিনি বলেন, 'সেলফ আইসোলেশন কঠিন ছিল, এখনও চলছে। তবে সত্যি কথা, আমি মনে করেছিলাম আরও কঠিন হবে। যেকোনো উপায়ে সময় পার হয়ে যাচ্ছে। প্রায় চার-পাঁচদিন হয়ে গেল। আর বেশি বাকি নেই, আশা করি এই সময়ও তাড়াতাড়ি পার হয়ে যাবে।'

কোয়ারেন্টিন শেষে কয়েকদিন অনুশীলনের পর কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ২০ মার্চ ডানেডিনে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। ২৩ মার্চ ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে। এই ম্যাচটি হবে দিবা-রাত্রির। ২৬ মার্চ ওয়েলিংটনে শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল। ম্যাচ তিনটি ২৮, ৩০ মার্চ ও ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। নেপিয়ার, অকল্যান্ড ও হ্যামিল্টনে টি-টোয়েন্টিতে লড়বে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড।


আরও পড়ুন:

বিষয়: